ক্রিকেট বিশ্বকাপ ফাইনালে ভারতের পরাজয়ের পর বাংলাদেশীদের আচরণ মোটেই ঠিক ছিল না। তারা আনন্দ করেছে এবং ভারতের সম্বন্ধে কু কথা বলেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাদের আচরণ ভারতবাসীকে আহত করেছে। তার জবাবে এখন শুরু হয়েছে ‘বয়কট বাংলাদেশ’।
দার্জিলিং এর একটি হোটেল সামাজিক মাধ্যমে আগেই জানিয়েছিল, যে তারা আর বাংলাদেশের কোন পর্যটকের বুকিং নেবে না। এরপরে দার্জিলিং এর অনেক হোটেলই সেই পথে হেঁটেছে। উত্তরের পাহাড় থেকে সেই ‘বয়কট বাংলাদেশ’ এখন বঙ্গোপসাগরে এসে পৌঁছেছে।
উড়িষ্যার পুরীর একটি হোটেল স্ট্যাটিজিক ইন তার সোশ্যাল মাধ্যমে একটি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ‘অনির্দিষ্টকালের জন্য আমাদের হোটেলে বাংলাদেশী পর্যটকদের বুকিং বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।’ এই নিয়ে ভারতবর্ষের একাধিক হোটেল বাংলাদেশী পর্যটকদের বয়কট করার বিষয়টি শোরগোল ফেলে দিয়েছে গোটা দেশে। হোটেল মালিকের বক্তব্য, বিশ্বকাপ ফাইনালে ভারতের পরাজয় নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বাংলাদেশীদের আচরণ অত্যন্ত নিন্দাজনক। প্রতিদেশী দেশের থেকে এহেন আচরণ আশা করা যায়না।
যে দেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদান অনস্বীকার্য সেই দেশ ভারতের পরাজয়ে কিভাবে এত আনন্দ পেতে পারে? এই প্রশ্নের উত্তরে বাংলাদেশের অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী বলেন “একটা দেশে বিভিন্ন মানসিকতার মানুষ আছে। বাংলাদেশের বহু মানুষ এখনো মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করে, অনেকে আবার সমর্থনও করে। ভারত পাকিস্তানের খেলা হলে অনেকেই পাকিস্তানের সমর্থন করে। তবে আমার মনে হয় এটি গোটা বাংলাদেশের ছবি নয়। যারা ভারত বিরোধী তারা ইন্ডিয়াকে সমর্থন করেনি। এমন নয় যে বাংলাদেশের কুড়ি কোটি মানুষ সবাই ভারত বিদ্বেষী।”
তিনি আরও বলেন, “এটাতো রাজনীতি এবং খেলা সর্বক্ষেত্রেই হয়। হতে পারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে যারা ছিল তারা হয়তো ভারত বিদ্বেষী। তাই এমন আচরণ করেছে। উল্টোদিকে বাংলাদেশের অনেক মানুষ ভারতের সিনেমা ভালোবাসে, মুক্তিযুদ্ধের অবদানকে মনে রাখে। যারা মুক্তিযুদ্ধের অবদানকে মনে রাখেনা, তারা বংশপরম্পরায় ভারত বিরোধী। তারা সব সময় পাকিস্তানের পক্ষে “
ইউটিউবে অনেক বাংলাদেশী ইউটিউবার কে বাংলাদেশের এই অশোভনীয় আচরনকে ঠিক হয়েছে বলে মেনে নিচ্ছেন না। তারা অনেকেই ইউটিউবের মাধ্যমে তাদের বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেছেন, বাংলাদেশ অনেকাংশেই ভারতের উপর নির্ভরশীল। বাংলাদেশের অনেক মানুষই শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যের জন্য ভারতবর্ষে যান। ভারতের বিরুদ্ধে বাংলাদেশীদের এই বয়কট আমাদের জন্য মধুর হবে না। এইভাবে যদি একের পর এক হোটেল বাংলাদেশীদের বয়কট করার সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে চিকিৎসা করতে যাওয়া অনেক বাংলাদেশী রুগীকে ভারতে অসুবিধার মধ্যে পড়তে হবে বলে সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছেন তারা।
সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক বাংলাদেশী লিখছেন ভারতে যে বাংলাদেশী পর্যটক এর আসেন তাতে নাকি ভারতীয় অর্থনীতি হিষ্টপুষ্ট ও বরিষ্ঠ হয়। ভারত যে পেঁয়াজ বাংলাদেশে পাঠায় তাতে নাকি ভারতীয় ব্যবসায় প্রচুর মুনাফা হয়। তাই ভারতীয় ব্যবসা দাররা বাংলাদেশে পেঁয়াজ পাঠায়। এইরকম অবান্তর যুক্তি দিয়ে তাঁরা ভারতের বিরুদ্ধে তাদের বিদ্বেষকে মান্যতা দিচ্ছেন।