তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায় দল ও বিধায়ক পথ ছাড়লেন। আজ সকালেই তিনি পৌঁছে যান বিধানসভায়। স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে ইস্তফাপত্র জমা দেন তিনি । সোমবার বাড়ি থেকে বেরোনোর আগে তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন। দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ এতটাই যে বিধানসভায় যাওয়ার সময় তিনি উপমুখ্যসচেতকের জন্য নির্দিষ্ট গাড়ি ব্যবহার করেননি। নিজের ব্যক্তিগত গাড়িতে বিধানসভায় পৌঁছান।
সোমবার বাড়িতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সন্দেশখালি, তাঁর বাড়িতে ইডির অভিযান সব ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘‘দলে এত দুর্নীতি, সন্দেশখালিকাণ্ড, আমাকে এত অপমান, অসম্মান, অবহেলা— আমাকে কষ্ট দিয়েছে। বেশ কিছু দিন ধরে আমি দলের থেকে দূরত্ব বজায় রেখে চলছি।’’
তিনি আরও বলেন “এত বছরে এই প্রথম বার আমি বিধানসভার বাজেট অধিবেশনে সে ভাবে থাকতে পারিনি। আমি মনে করি, যে কোনও কাজে স্বতঃস্ফূর্ত থাকা উচিত। এত বছর ধরে আমি তৃণমূল করছি। দলের সঙ্গে আমার দীর্ঘ ২৩-২৪ বছরের সম্পর্ক। আমার বাড়িতে গত ১২ জানুয়ারি ইডি এসেছিল। দল আমার পাশে দাঁড়ায়নি। কেউ একটা ফোনও করেনি। আমার পরিবারকে কেউ সান্ত্বনা দেয়নি।’’
কত কাল থেকেই তাপস রায়ের বিধায়ক ও দল ছাড়ার কথা শোনা যাচ্ছিল। তাই আজ সকালেই তাপস বাবুর বৌবাজারের বাড়িতে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ও কুনাল ঘোষ তার বাড়িতে যান। সেখানে বিভিন্নভাবে তাকে বোঝানোর চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়েছেন দুজনেই। তাপস রায়ের বাড়িতে থাকাকালীন কুনালকে শোকজ তৃণমূল কংগ্রেসের।
তৃণমূলের প্রচুর সাধারণ কর্মী সমর্থক সকাল থেকেই তার বাড়ির সামনে ভিড় জমান। তারা বিভিন্নভাবে বলতে চান যেন তাপস বাবু বিধায়ক পদ ও দল না ছাড়েন। কিন্তু তাদেরও হতাশ হতে হয়। অনেকেই চোখের জলে বিমর্ষ মনে তাপস রায়ের বাড়ি থেকে ফিরে আসেন। তাপস রায় তিনবারের বিধায়ক এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুরনো দিনের সাথীদের মধ্যে অন্যতম।
তাপস রায় তার রাজনৈতিক জীবন এখানে শেষ করবেন না অন্য কোন দলের হয়ে নতুন ইনিং শুরু করবেন সেটা এখন দেখার বিষয়। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের অনেকেই মনে করছেন তৃণমূলের নবীন এবং প্রবীনদের বিভেদে বিরুদ্ধে তার এই সিদ্ধান্ত। তিনি তার দ্বিতীয় ইনিংসের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পদ্মশিবিরে শুরু করতে পারেন। তাপস রায় কি করবেন সেটাই এখন দেখার।