রামলালার মূর্তি হিসেবে অরুণ যোগীরাজের তৈরি প্রতিমা চূড়ান্ত হয়েছে। প্রথম দর্শনেই মুগ্ধ সবাই।

আজ থেকে ঠিক ২০ দিন পর, ২২শে জানুয়ারী ভগবান রাম তাঁর বিশাল প্রাসাদে অধিষ্ঠিত হবেন। রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠা সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এদিকে, রাম মন্দিরে উপস্থিত রামলালার মূর্তি নিয়েও একটি বড় খবর আসছে । বলা হচ্ছে, অরুণ যোগীরাজের তৈরি প্রতিমা চূড়ান্ত হয়েছে।

বিজেপি নেতা ও মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী তাঁর X -এ ছবি শেয়ার করে লিখেছেন “যেখানে রাম সেখানে হনুমান, অযোধ্যায় ভগবান রামের প্রাণ প্রতিষ্ঠার জন্য মূর্তি নির্বাচন চূড়ান্ত হয়েছে। আমাদের দেশের প্রখ্যাত ভাস্কর আমাদের গর্ব অরুণ যোগীরাজের খোদাই করা ভগবান রামের মূর্তি অযোধ্যায় স্থাপন করা হবে। এটি রাম হনুমানের অদম্য সম্পর্কের আরেকটি উদাহরণ। কোন ভুল নেই যে এটি হনুমানের দেশ কর্ণাটক থেকে রামলালার একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবা।”

ভগবান রামের মূর্তি ইস্যুতে রাম মন্দির ট্রাস্টের সদস্য কামেশ্বর চৌপাল বলেছেন “রামলালার তিনটি মূর্তিই প্রস্তুত, তিনটি মূর্তি মন্দিরে ব্যবহার করা হবে। এতে কোন ধরনের প্রতিযোগিতা ছিল না। তিনটি মূর্তি দরকার ছিল, তিনটি জায়গায় মূর্তি স্থাপন করা হবে। এই কথা মাথায় রেখেই তিনটি মূর্তি তৈরি করা হয়েছে….”

রামলালার তিনটি খোদাই করা মূর্তিই স্থাপন করা হবে বিশাল রাম মন্দিরে।  মন্দির ট্রাস্টের সদ্য সমাপ্ত বৈঠকে, গর্ভগৃহে কোন মূর্তি স্থাপন করা উচিত তা নিয়ে সদস্যরা তাদের বিভিন্ন মতামত দিয়েছেন। এরপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, দেশের তিনজন খ্যাতিমান ভাস্কর্যের ৭ মাসের পরিশ্রমে তৈরি করা ভাস্কর্যগুলো খুবই মনোমুগ্ধকর। এমতাবস্থায় ট্রাস্ট তিনটি মূর্তিই রাম মন্দিরে স্থাপিত হওয়ার বিষয়ে একমত হয়েছে। এই মূর্তিগুলির মধ্যে কোনটি গর্ভগৃহে স্থাপন করা হবে, কোনটি প্রথম তলায় রাম দরবারে এবং কোনটি দ্বিতীয় তলায় ভবনে প্রতিষ্ঠিত করা হবে, তা কাশীর আচার্য এবং প্রাণপ্রতিষ্ঠার পণ্ডিত আচার্য গণেশ্বর দ্রাবিড় নির্ধারণ করেছেন বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যাচ্ছে। 

ঘোষণার আগে মূর্তি পরীক্ষা করা হবে

অযোধ্যার শ্রী রাম জন্মভূমি মন্দির এমনভাবে তৈরি করা হচ্ছে যাতে মন্দিরে ১০০০ বছরে কোনও সংস্কারের প্রয়োজন হবে না। তাই মন্দিরে মূর্তি স্থাপনের বিষয়ে অনেক মানদণ্ড নির্ধারণ করা হয়েছে। যে প্রতিমা নির্বাচন করা হবে তা এই মানদণ্ডের ভিত্তিতে পরীক্ষা করা হবে। প্রথমেই দেখা হয়েছে কোন মূর্তিটি রামচরিতমানস এবং বাল্মীকি রামায়ণে বর্ণিত শ্রী রামের শিশুরূপের সাথে সবচেয়ে বেশি মেলে।

এরপর পরীক্ষা করা হয়েছে হলুদ, চন্দন, ধূপ, ধূপের ধোঁয়া এবং অন্যান্য পূজার উপকরণে প্রতিমায় কোনো দাগ বা প্রভাব পরছে কিনা । শুধু তাই নয়, এটাও দেখা হয়েছে রাম নবমীর দিন যখন সূর্যের রশ্মি রামলালায় পড়বে, তখন কোন প্রতিমাটি ভালো দেখাবে। প্রতিমা নির্বাচনের ঘোষণার আগে এরকম কিছু মান এবং এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

শ্যাম শিলার তৈরি মূর্তি সবচেয়ে উপযুক্ত

প্রতিমা ঘোষণার আগে প্রতিমা বিশেষজ্ঞরা খতিয়ে দেখেছেন প্রতিমাগুলি। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শ্যাম শিলায় তৈরি মূর্তি মার্বেল পাথরে তৈরি মূর্তির থেকে অনেক বেশি সময় অক্ষত থাকবে, তাই শ্যাম শিলায় তৈরি দুটি ভিন্ন শিশুসদৃশ মূর্তির মধ্যে একটিকে বেছে নেওয়া হয়েছে। তাই দক্ষিণী ভাস্কর অরুণ যোগীরাজ দ্বারা খোদাই করা মূর্তিটিকে গর্ভগৃহে প্রাণ প্রতিষ্ঠার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে। অন্য আর একটি কালো পাথরের মূর্তি কর্ণাটকের সুপরিচিত ভাস্কর গণেশ ভাট দ্বারা তৈরি। তৃতীয় মূর্তিটি জয়পুরের মার্বেলের। এটি প্রস্তুত করেছেন প্রখ্যাত ভাস্কর সত্য নারায়ণ পান্ডের দল।

তিনটি প্রতিমার জন্য পোশাক, গহনা ও মুকুট তৈরি করা হচ্ছে। গর্ভগৃহে রামলালা যে আসনটিতে বসবেন সেটিও প্রস্তুত। মন্দির ট্রাস্টের ট্রাস্টি ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি কামেশ্বর চৌপাল জানান, অস্থায়ী মন্দিরে স্থাপিত সমস্ত মূর্তি গর্ভগৃহে স্থানান্তরিত করা হবে।

এখন হবে তিনের বদলে পাঁচবার আরতি

মন্দির ট্রাস্ট এখন রাম লালার পূজাকে আরও সম্প্রসারণ করতে চলেছে। এর মধ্যে থাকবে দর্শনের সময়কাল বাড়ানো এবং আরতি বাড়ানো। বর্তমানে রাম লালার মাত্র তিনটি আরতি হয়। সকাল, বিকাল এবং সন্ধ্যা। এখন আরতির সংখ্যা বাড়িয়ে পাঁচ করা হবে। এতে মঙ্গলা আরতি ও শয়ন আরতি বাড়বে। পূজা পদ্ধতিতে আর কী যোগ হবে? এটা টেম্পল ট্রাস্টের হাই পাওয়ার রিলিজিয়াস কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে।

Exit mobile version