বাংলাদেশের পর্যটকদের আপাতত রুম দেওয়া হবে না। জানিয়ে দিল দার্জিলিঙের একটি হোটেল।

বাংলাদেশের পর্যটকদের আপাতত রুম দেওয়া হবে না। সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন একটি পোস্টে জানিয়ে দিল দার্জিলিঙের একটি হোটেল। সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে হোটেলটির তরফ থেকে লেখা হয়েছে, ‘অনির্দিষ্টকালের জন্য আমাদের হোটেলে বাংলাদেশী ট্যুরিস্টদের বুকিং বন্ধ রাখা হল।’ কেন তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সে বিষয়ে কিছু জানায়নি হোটেল কর্তৃপক্ষ।

এবারের আইসিসি ওডিআই বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারত অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে যায়। এরপর সোশ্যাল মাধ্যমে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় বিশেষত সেখানকার যুবক যুবতীদের মধ্যে ভারত-বিরোধিতার ছবি দেখা গেছে, তা সত্যই দুর্ভাগ্যজনক।

বাংলাদেশের এই ভিডিও সামনে আসার পর দেশপ্রেমী ভারতীয়রা এই ব্যাপারটাকে খুব ভালো চোখে দেখছে না। হোটেলে বাংলাদেশী পর্যটকদের বুকিং বন্ধের পোস্ট হয়তো ওই ভিডিওর প্রতিক্রিয়া বলে অনেকে মনে করছে।

বাংলাদেশের পর্যটকদের নিষিদ্ধ করার পর রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে উঠেছে দার্জিলিঙের হোটেলটি। নেট দুনিয়ায় অনেকেই এই সিদ্ধান্তের প্রশংসা করছেন।

বাংলাদেশের ভারত-বিরোধিতা কেন?

এবারের ওডিআই বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দল একেবারেই ভালো পারফরম্যান্স করতে পারেনি। ১৯৯৯ সালে প্রথমবার ওডিআই বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে বাংলাদেশ। প্রথমবার পাকিস্তানকে হারিয়ে চমক দিলেও, তারপর থেকে কোনওবারই বেশিদূর এগোতে পারেনি বাংলাদেশ।

এবারও লিগ পর্যায় থেকেই বিদায় নিতে হয়েছে বাংলাদেশকে। এবারের বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে শাকিব আল-হাসানদের আচরণ ক্রিকেট বিশ্বে বাংলাদেশের সুনামে বিরাট আঘাত করেছে। নিজেদের দলের হতাশাজনক পারফরম্যান্স ভুলে এখন অন্ধ ভারত-বিরোধিতায় মেতে উঠেছেন বাংলাদেশের তথাকথিত ক্রিকেটপ্রেমীরা।

গত কয়েকদিন আগে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশে ভারত-বিরোধিতার অসংখ্য ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। একজনকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘অসাধারণ। আমি ছোট থেকেই অস্ট্রেলিয়াকে সাপোর্ট করি। অন্য কোনও দল নয়, শুধু অস্ট্রেলিয়া। ইন্ডিয়াকে অপছন্দ করি।’ অন্য একজন বলেছে, ‘ইন্ডিয়া হারা মানেই আমাদের কাছে পৈশাচিক আনন্দ। আমাদের মনে হচ্ছে, ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়া না, বাংলাদেশ কাপ জিতেছে। কী যে আনন্দ লাগছে বলে বোঝাতে পারব না।’ উল্লাসের মধ্যেই এক তরুণ বলেছে, ‘অস্ট্রেলিয়ার জয়ে যত খুশি হয়েছি, বাংলাদেশ জিতলেও এত খুশি হতাম না।’ এক যুবক বলেছে, ‘আমরা ইন্ডিয়ার পরাজয় চাইছিলাম। অস্ট্রেলিয়ার জয়ে আমরা যত বেশি খুশি হয়েছি, তার চেয়ে বেশি খুশি হয়েছি ইন্ডিয়ার পরাজয়ে।’

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় সেনাদের বীরত্ব ও সহযোগিতাকে হয়তো বাংলাদেশের যুবক যুবতীরা ভুলে গেছে। ভারতীয় সেনার সাহায্য ব্যতীত পূর্ব পাকিস্তান কোনদিনই বাংলাদেশ হতে পারত না। সেই ইতিহাস হয়তো বাংলাদেশি যুবক যুবতীদের মনে ফিকে হয়ে গেছে। যে সমাজ যে জাতি ইতিহাসকে ভুলে যায় তাদের ভবিষ্যৎ ইতিবাচক হতে পারে না।

Exit mobile version