বিহারে রাজনৈতিক পরিবর্তনের হাওয়া এখন ধীরে ধীরে ঝড়ের রূপ নিতে শুরু করেছে। বিহার বড় রাজনৈতিক পরিবর্তনের সাক্ষী হতে চলেছে।

বিজেপিকে ছেড়ে বেড়িয়ে গিয়ে আরজেডি (RJD) র সাথে সরকার তৈরী করেছিলেন নীতিশ কুমার। নীতিশ কুমার হন মুখমন্ত্রী আর লালু প্রসাদের পুত্র তেজস্বী যাদব উপ মুখ্যমন্ত্রী। জানা যাচ্ছে এই জোটের মূলে ছিল একটি অভ্যন্তরীণ চুক্তি। ঠিক হয় ২০২৪ এ নীতিশ কুমার দিল্লি যাত্রা করবেন, আর ২০২৫ শে তেজস্বী যাদব বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হবেন।

২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি বিরোধী জোট তৈরি করার জন্য নীতিশ কুমার সমস্ত বিজেপি বিরোধী দলকে প্রথমদিকে এক ছাতার তলায় নিয়ে আসার চেষ্টা  করেছিলেন। আজ I-N-D-I-A জোট তারই ফল। 

I.N.D.I.A-এর বৈঠকের পর থেকেই জল্পনা শুরু হয়।

I.N.D.I.A-এর বৈঠকের পর একটা বিষয় স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে সেখানে কোনও দায়িত্ব পাচ্ছেন না নীতীশ কুমার। নীতীশ আহ্বায়ক হবেন না বা প্রধানমন্ত্রী পদের দাবিদারদের মধ্যে তাঁর জন্য কোনও সুযোগ নেই। কারণ জোটের বৈঠকে মল্লিকার্জুন খড়গের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী পদের সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খড়গের নামের প্রস্তাবক ছিলেন। অরবিন্দ কেজরিওয়ালও খড়গেকে সমর্থন করে প্রতিদ্বন্দ্বীর তালিকা থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন। এর পর থেকেই I.N.D.I.A-এর সাথে নীতীশের অসন্তোষ নিয়ে জল্পনা চলছে।

‘ল্যান্ড ফর জব’ মামলায় লালুপ্রসাদ যাদব ও তেজস্বী যাদব ইডির দুবার সমন পেয়েছেন। তাই লালু প্রসাদ যাদব খুব তাড়াতাড়ি তেজস্বী যাদবকে মুখ্যমন্ত্রী করতে চান। সূত্র মারফত জানা গেছে এই মুহূর্তে তেজস্বী যাদব কে মুখ্যমন্ত্রী পথ ছেড়ে দেওয়ার জন্য নীতিশ কুমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করছেন লালুপ্রসাদ যাদব। 

জেডিইউ এর রাষ্ট্রীয় সভাপতি লালন সিং এবং মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের মধ্যে বিবাদ চরম সীমায়। আসলে লালন সিং লালু প্রসাদ যাদবের খুব কাছের মানুষ। তেজস্বী যাদবকে মুখ্যমন্ত্রী করার বিষয়ে লালন সিং মূল ভূমিকা গ্রহণ করেছেন বলে নীতিশ কুমার গোষ্ঠী মনে করছে। তাই জল্পনা চলছে লালন সিংয়ের পদত্যাগপত্র চেয়ে নিয়েছেন নীতীশ কুমার। নিতীশ কুমারের দলের ১১ জন বিধায়ক বর্তমানে ‘নট রিচেবেল’ আছেন বলেও জানা যাচ্ছে। 

দিল্লিতে আজ থেকে চলা দু দিনের রাষ্ট্রীয় বৈঠকে নীতিশ কুমার ও তার দলের শীর্ষস্থানীয় নেতৃত্ব হাজির হয়েছেন। শোনা যাচ্ছে সেখানে বড় কিছু সিদ্ধান্ত নিতে পারেন নীতিশ কুমার। দু একদিনের মধ্যেই বড় পরিবর্তন ঘটতে চলেছে বিহারের রাজনীতিতে। এদিকে জানা যাচ্ছে বিজেপি তার সমস্ত বিধায়কদের দিল্লি ডেকে নিয়েছে।

বিহারের রাজনীতিতে কী কী সম্ভাবনা দৃশ্যমান?

এখন প্রশ্ন উঠেছে, জল্পনা-কল্পনার কোনো সত্যতা থাকলে রাজনৈতিক পরিবর্তনের সম্ভাবনা কী?

প্রথম সম্ভাবনা হল নীতীশ কুমার তার বিধায়কদের নিয়ে আবার বিজেপির সাথে হাত মেলাবেন এবং বিহারে এনডিএ সরকার গঠিত হবে।

দ্বিতীয় সম্ভাবনা হল RJD নীতীশ কুমারকে সরিয়ে বিহারে সরকার গঠন করবে ।

ঘটনা প্রবাহ বিচার করে বিশেষজ্ঞ মহলের তৃতীয় সম্ভাবনা হল নীতিশ কুমার তার সরকার বরখাস্ত করতে পারেন এবং রাজ্যপালের কাছে বিহারে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করার অনুরোধ করতে পারেন। 

যদি নীতিশ কুমার তার সরকারকে বরখাস্ত করেন ও রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন লাগু হয় তবে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের সাথে সাথে বিহারে বিধানসভা নির্বাচন হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *