সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র যাকে সবাই ‘কালীঘাটের কাকু’বলে জানে তাকে শুক্রবার জোকার ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে সকাল সকাল ইডি পৌছায় SSKM-এ। কিন্তু সুজয়কৃষ্ণকে শুক্রবার ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ায় সংশয় তৈরি হয়েছে। SSKM সূত্রে খবর, কালীঘাটের কাকুর শারীরিক পরিস্থিতির ঠিক নেই, রাতে বুকে ব্যথা অনুভব করায় তাকে হৃদ্রোগ বিভাগের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলছেন ইডি আধিকারিকেরা।
আইসিইউতে সাধারণ শয্যায় রাখা হয়নি তাঁকে। ‘কাকু’ রয়েছেন শিশুদের জন্য বরাদ্দ একটি শয্যায়। হাসপাতাল সূত্রে খবর, অন্য কোনও শয্যা খালি না থাকায় ওই শয্যায় তাঁকে রাখা হয়েছে।
নিয়োগ মামলায় সুজয়কে পাঁচ মাস আগে গ্রেফতার করেছিল ইডি। তাঁর শারীরিক অসুস্থতার জন্য তাঁর দীর্ঘ দিন ধরেই এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে । ইডির কাছে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার কিছু তথ্য আছে যার অনুসন্ধান করতে কালীঘাটের কাকুর কণ্ঠস্বর প্রয়োজন। তার গলার স্বরের নমুনা অনেক দিন ধরে সংগ্রহ করার চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি। কিন্তু বার বার তাতে বাধা আসছে বলে অভিযোগ।
এর আগে SSKM হাসপাতালের তরফে ইডিকে জানানো হয়েছিল, ‘মানসিক চাপে’ রয়েছেন নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত ‘কালীঘাটের কাকু’ । সেই কারণেই তিনি গলার স্বরের নমুনা দিতে পারছেন না। এই বিষয়ে ইডি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল। আদালত নির্দেশ দিয়েছে কালুরঘাটের কাকুর কণ্ঠস্বর গ্রহণের জন্য। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়েও ইডি প্রশ্ন তুলেছে। আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও ‘কালীঘাটের কাকু’ র কন্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করতে পারছেনা ইডি।
সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের বর্তমান শারীরিক পরিস্থিতি জানার জন্য SSKM হাসপাতালের সুপারকে বুধবার ইডি সমন করেছিল। তাকে বলা হয়েছিল সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের সমস্ত বর্তমান রিপোর্ট নিয়ে ইডি অফিসে সরাসরি দেখা করার জন্য। শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি পৌঁছাতে পারেননি। ই-মেইলের মাধ্যমে কালীঘাটের কাকুর রিপোর্ট ইডিকে তিনি জমা করেন।
ইডি সূত্রে জানা গেছে শুক্রবারই ইডি সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করতে চায়। তারা SSKM থেকে ‘কালীঘাটের কাকু’ কে জোকায় ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যাবে। সেখানে ‘কালীঘাটের কাকু’ র স্বাস্থ্য পরীক্ষা করবে এই বিষয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ড। তাদের অনুমতি পেলে সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের কন্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করবে ইডি।
আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্ত শেষ করতে হবে ইডিকে। আদালতের তরফে এ ব্যাপারে কড়া নির্দেশ রয়েছে। সে কারণেই কালীঘাটের কাকুর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহের ক্ষেত্রে আর বেশি সময় নষ্ট করতে চাইছে না ইডি। তাই এই বাড়তি তৎপরতা বলে ইডি সূত্রের দাবি।