দানিশ আলী, লোকসভা সাংসদ,ও এথিক্স কমিটির মেম্বার বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি) থেকে বরখাস্ত হয়েছে। দলবিরোধী কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বিএসপি নেত্রী মায়াবতী তাকে বরখাস্ত করেছে বলে জানা যাচ্ছে।

শনিবার জারি করা একটি অফিসিয়াল নোটিশে, বিএসপি বলেছে যে তারা দলবিরোধী কার্যকলাপে জড়িত থাকার জন্য তার এমপি দানিশ আলীকে বরখাস্ত করেছে। 

https://twitter.com/TOICitiesNews/status/1733449402222821611

দলের জাতীয় সাধারণ সম্পাদক সতীশ চন্দ্র মিশ্র শনিবার দানিশ আলীকে দেওয়া চিঠিতে লিখেছেন – 

আপনাকে মৌখিকভাবে অনেকবার বলা হয়েছে যে আপনি পার্টির নীতি, বিচারধারা এবং অনুশাসন এর বিরুদ্ধে গিয়ে কোন বয়ান বা কাজ করবেন না। কিন্তু এরপরেও আপনি বারবার পার্টির বিরুদ্ধে গিয়ে কাজ করছেন।

এখানে আপনাকে স্মরণ করানো উচিত হবে যে সাল ২০১৮ পর্যন্ত আপনি শ্রী দেবেগৌড়াজীর পার্টির সদস্য হয়ে কাজ করছিলেন। কর্নাটকের ২০১৮ সালের নির্বাচনে বহুজন সমাজ পার্টি ও জনতা পার্টি জোট করে নির্বাচনে লড়েছিল। এই জোটেও আপনি দেবেগৌড়াজীর পার্টির তরফ থেকে সক্রিয় ছিলেন। কর্ণাটকের নির্বাচনের ফলাফলের পর শ্রী দেবেগৌড়াজীর অনুরোধে আপনাকে আমরহা থেকে বহুজন সমাজ পার্টির প্রার্থীর টিকিট দেওয়া হয়েছিল। টিকিট দেওয়ার আগে দেবেগৌড়াজি এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে আপনি পার্টির লাইনে কাজ করবেন এবং পার্টির নীতি আদর্শকে অনুসরণ করবেন। আপনিও সেই আশ্বাস দিয়েছিলেন। তারপর আপনাকে পার্টির সদস্য পথ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আপনি সেই আশ্বাস ভুলে গিয়েছেন। দলের স্বার্থে আপনাকে অবিলম্বে দলের সদস্য পদ থেকে বরখাস্ত করা হচ্ছে।

বিএসপি থেকে তার বরখাস্তের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে দানিশ আলী বলেছিলেন যে তাকে দল থেকে বহিষ্কারের “বেহেঞ্জির” সিদ্ধান্ত দুর্ভাগ্যজনক।

তিনি বলেছিলেন যে তিনি সম্পূর্ণ নিষ্ঠার সাথে বিএসপিকে একটি শক্তিশালী দলে পরিণত করার জন্য কাজ করেছেন এবং কখনও কোনও দল বিরোধী কাজে লিপ্ত হননি।

লোকসভার এথিক্স কমিটির মেম্বার ছিলেন দানিশ আলী। ‘প্রশ্নের বদলে ঘুষ’ মামলায় তিনি কংগ্রেসের অন্য সদস্যদের সঙ্গে মহুয়া মিত্র কে সমর্থন করেছিলেন এবং মহুয়া মিত্রের সঙ্গে এথিক্স কমিটির বৈঠক থেকে ওয়াক আউট করেছিলেন। লোকসভা থেকে বহিষ্কৃত তৃণমূল কংগ্রেস নেতা মহুয়া মৈত্রের ন্যায়বিচারের জন্য তিনি শুক্রবার সংসদের বাইরে একক প্রতিবাদও করেছিলেন।

দানিশ আলী ও রাহুল গান্ধীর ছবি

বিএসপি সাংসদ দানিশ আলীকে নিয়ে বিজেপি সাংসদ রমেশ বিধুরির আপত্তিকর বক্তব্যের কারণে রাজনীতি উত্তপ্ত হয়েছিল। বিধুরীর বক্তব্যের সর্বত্র সমালোচনা হয়। এর মধ্যে কংগ্রেসের সিনিয়র নেতা রাহুল গান্ধী সেপ্টেম্বরে দানিশ আলীর সাথে তার বাসভবনে দেখা করেছিলেন। এই সময় রাহুল গান্ধীর সঙ্গে ছিলেন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কেসি ভেনুগোপাল ও সাংসদ ইমরান প্রতাপগড়ী।

রাহুল গান্ধীর সাথে দেখা করার পর দানিশও আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন এবং বলেছিলেন  “রাহুলের সাথে দেখা করার পরে তিনি অনুভব করেছিলেন যে তিনি একা নন। রাহুল আমাকে উৎসাহ দিতে এখানে এসেছিল। তিনি আমাকে বলেছিলেন যে এই জিনিসগুলি মনে রাখবেন না। আমি তার কথায় স্বস্তি অনুভব করেছি এবং ভাল অনুভব করেছি।”

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ২৪ এর লোকসভা ভোটে মায়াবতী যে নিরপেক্ষ ভাবে একা লড়ার বার্তা দিয়েছেন, দানিস আলীর সঙ্গে রাহুল গান্ধী বা l- N-D-I-A  জোটের সুসম্পর্ক তার পার্টি লাইনকে চ্যালেঞ্জ করছে। তাই মায়াবতীর এই সিদ্ধান্ত।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *