প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কল্কি ধাম মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেন। জেনে নিন মন্দিরটির কিছু বিশেষত্ব।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কল্কি ধাম মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেন। সম্বলের আঙ্কারা কাম্বো এলাকায় তৈরি হতে চলেছে এই মন্দির। সাদা ও জাফরান রঙে সাজানো হবে এই মন্দিরটিকে। অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণের পর এই মন্দিরটির নির্মাণের ঘটনা সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয়েছিল। আচার্য প্রমোদ কৃষ্ণম শ্রী কল্কি ধাম কনস্ট্রাকশন ট্রাস্টের চেয়ারম্যান। তাঁর আমন্ত্রণেই প্রধানমন্ত্রী মোদী ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করছেন। সম্প্রতি প্রমোদ কৃষ্ণকে দল বিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে ছয় বছরের জন্য দল থেকে বহিষ্কার করেছে কংগ্রেস।

সারা বিশ্বে এই মন্দিরটি অনন্য

কল্কি হলেন ভগবান বিষ্ণুর দশম এবং শেষ অবতার। এই মন্দিরটি সেই কল্কিকেই উৎসর্গ করা হয়েছে। সনাতন ধর্মের বিশ্বাস অনুসারে কলিযুগের শেষে ভগবান বিষ্ণু কল্কি রূপে পৃথিবীতে আবির্ভূত হবেন। এই দিক থেকে, এই মন্দিরটি বিশ্বে অনন্য, কারণ যাঁর জন্য মন্দিরটি তৈরি করা হচ্ছে সেই অবতার এখনও ধরাধামে আবির্ভূত হয়নি।

এই মন্দিরটিতে ১০ টি গর্ভগৃহ থাকবে। এই দশটি গর্ভগৃহে ভগবান বিষ্ণুর দশ অবতার অধিষ্ঠিত হবেন। এই মন্দিরের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হল এই মন্দিরটি একই গোলাপী পাথর দিয়ে তৈরি করা হবে যা দিয়ে অযোধ্যার রাম মন্দির এবং সোমনাথ মন্দির তৈরি করা হয়েছে। এই মন্দিরেও ইস্পাত বা লোহা ব্যবহার করা হবে না। ৫ একর জমির ওপর নির্মিত হবে এই মন্দিরটি । এই মন্দিরটি নির্মাণ করতে সময় লাগবে ৫ বছর।

কল্কি দেবতার সাদা ঘোড়া

নতুন মন্দিরের কাছে অবস্থিত কল্কি পীঠে একটি সাদা ঘোড়ার মূর্তিও স্থাপন করা হয়েছে। হিন্দু শাস্ত্রে বলা আছে, ভগবান শিব কল্কি অবতারকে দেবদত্ত নামে একটি সাদা ঘোড়া দেবেন। এই সাদা ঘোড়ার মূর্তিটির তিনটি পা মাটিতে এবং চতুর্থটি বাতাসে উত্থিত। লোকে বলে এই পা ধীরে ধীরে নীচে নেমে যাচ্ছে। যেদিন এটি সম্পূর্ণরূপে নীচে নেমে যাবে, সেদিন ধরে নেওয়া হবে কল্কি অবতার আবির্ভূত হবার সময় চলে এসেছে।

—————————বিজ্ঞাপন————————

———————————————————–

ভগবান কল্কি কেন আসছেন?

সম্বল এবং এখানকার কল্কি ধামের নিজস্ব রহস্য রয়েছে। প্রশ্ন জাগে কেন ভগবান বিষ্ণু কল্কি রূপে অবতীর্ণ হবেন? ধর্মীয় শাস্ত্রে বলা হয়েছে কলিযুগ কখন চরমে উঠবে। যখন পাপ ও অন্যায় খুব বেড়ে যাবে তখন কল্কি তাদের ধ্বংস করার জন্য পৃথিবীতে অবতীর্ণ হবেন । আচার্য প্রমোদ কৃষ্ণম প্রায় ১৮ বছর আগে এই মন্দিরটি প্রতিষ্ঠার সংকল্প করেছিলেন।

কল্কিধাম মন্দিরের কিছু বিশেষত্ব

প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়ে কংগ্রেস থেকে বহিষ্কার করা হয়

প্রধানমন্ত্রীর শ্রী কল্কি ধাম ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার ইঙ্গিত পাওয়ার পরে আচার্য প্রমোদ কৃষ্ণমকে ছয় বছরের জন্য দল থেকে বহিষ্কার করে কংগ্রেস। আচার্য প্রমোদ কৃষ্ণম ১লা ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ভিত্তিপ্রস্তর প্রতিষ্ঠার অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য আমন্ত্রণ জানান। এই আমন্ত্রণের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর ইতিবাচক মনোভাবের পরে কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি উত্তপ্ত হয়ে পড়ে। ১০ ফেব্রুয়ারি প্রমোদ কৃষ্ণমের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার একটি চিঠি জারি জারি করে কংগ্রেস।

কলিযুগে সম্বলের ভূমিতে ভগবান কল্কি অবতারিত হবেন

স্বাগত বক্তব্যে আচার্য প্রমোদ কৃষ্ণম বলেন- আমি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে শ্রী কল্কি ধামে স্বাগত জানাই… ১৮ বছর আগে দেখা ‘সনাতন ধর্ম’-এর স্বপ্ন পূরণ করতে দেশের প্রতিটি কোণ থেকে হাজার হাজার সাধু এখানে সমবেত হয়েছেন। আমাদের ধর্মগ্রন্থে লেখা আছে যে যখনই অধর্ম ও পাপ চরমে পৌঁছেছে, তখনই অধার্মিককে ধ্বংস করে ধার্মিকতাকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার জন্য ভগবান বিভিন্ন রূপে পৃথিবীতে এসেছেন। তিনি বলেন, ত্রেতায় ভগবান রাম অযোধ্যায় জন্মগ্রহণ করেন। দ্বাপরে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ মথুরায় । কলিযুগে ভগবান কল্কি সম্বলের ভূমিতে অবতীর্ণ হবেন। তিনি এই অনুষ্ঠানে এসে কল্কি ধামের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদীকে ধন্যবাদ জানান।

 

Exit mobile version