রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভ্লাদিমির পুতিন এগিয়ে। রাশিয়ার কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটির মতে, পুতিন প্রায় ৮৭.৩ শতাংশ ভোট নিয়ে এগিয়ে রয়েছেন (এখন পর্যন্ত ৫০ শতাংশের বেশি ভোট গণনা করা হয়েছে)। দ্য মিরর দ্বারা রিপোর্ট করা হয়েছে যে পুতিন ৮৮% ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন এবং তার প্রতিদ্বন্দ্বীদের কেউই ৫% ভোটের বেশি যেতে পারেনি। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির ভ্লাদিমিরোভিচ পুতিন তার পঞ্চম মেয়াদে ক্ষমতায় বসতে চলেছেন ও তিনি নির্বাচন প্রক্রিয়াকে স্বাগত জানিয়েছেন।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, “রাশিয়া ও ন্যাটোর মধ্যকার দ্বন্দ্ব পৃথিবীকে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিকে নিয়ে যাবে।” রাশিয়ার সর্বোচ্চ নেতা ভ্লাদিমির পুতিন বিশাল ব্যবধানে এক্সিট পোল জেতার পর একটি সাংবাদিক সম্মেলনে পূর্বোক্ত বিবৃতি দিয়েছেন।
রয়টার্স-এর একজন সাংবাদিক ইমানুয়েল ম্যাক্রনের সাম্প্রতিক মন্তব্যের ওপর তাঁর প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়ায় তিনি বলেছেন যে, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ প্রত্যাশার চেয়ে দ্রুত আসতে পারে এবং কেউ এতে আগ্রহী নয়।
“ট্রাস্ট অ্যান্ড হোপের” ইঙ্গিত হিসাবে প্রাথমিক ফলাফলকে স্বাগত জানিয়ে রাশিয়ান রাষ্ট্রপতি বলেছিলেন, “অবশ্যই, আমাদের সামনে অনেক কাজ রয়েছে। তবে আমি সবার জন্য এটি পরিষ্কার করতে চাই: যখন আমরা একত্রিত হয়েছিলাম, তখন আমাদের ভয় দেখানোর জন্য, আমাদের ইচ্ছা এবং আমাদের আত্মবিবেককে দমন করার জন্য কেউ আমাদের পরিচালিত করতে পারেনি। তারা অতীতে ব্যর্থ হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও তারা ব্যর্থ হবে,”
গত ২০০ বছরের রাশিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ মেয়াদী রাশিয়ান রাষ্ট্রপতি জোর দিয়েছেন যে “ইতিহাস নিজেকে পুনরাবৃত্তি করছে “। তিনি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে রাশিয়ার সাম্প্রতিক অগ্রগতি তুলে ধরেন এবং সেনাবাহিনীকে এর পরিষেবার জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি যোগ করেন যারা রাশিয়াকে ছাড়িয়ে যেতে চেয়েছিল, তারা শেষ পর্যন্ত সেটা করতে ব্যর্থ হবে।
ভ্লাদিমির পুতিনের রাজনৈতিক জীবন
পুতিন বিদেশী গোয়েন্দা অফিসার হিসাবে ১৬ বছর কেজিবি-তে কাজ করেছেন। ১৯৯১ সালে লেফটেন্যান্ট কর্নেলের পদে থাকা কালীন পদত্যাগ করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু করেন। ১৯৯৬ সালে, তিনি রাষ্ট্রপতি বরিস ইয়েলতসিনের প্রশাসনে যোগদান করেন। ১৯৯৯ সালের আগস্টে প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হওয়ার আগে তিনি সংক্ষিপ্তভাবে ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিসের (এফএসবি) পরিচালক এবং তারপরে রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
ইয়েলৎসিনের পদত্যাগের পর, পুতিন চার মাসের জন্য ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হন।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে ২০০০ সালে পুনরায় নির্বাচিত হন। এটি তাঁর প্রথম পূর্ণ মেয়াদ রাষ্ট্রপতির কার্যকাল। এর পর ২০০৪ সালে তিনি দ্বিতীয়বার রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। দুইবার রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হবার পর সাংবিধানিক সীমাবদ্ধতার কারণে, পুতিন আবার ২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত দিমিত্রি মেদভেদেভের অধীনে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন । তিনি ২০১২ সালে আবার রাষ্ট্রপতি পদে ফিরে আসেন। এটি তাঁর রাষ্ট্রপতি হিসেবে তৃতীয় কার্যকাল। ২০১৮ সালে চতুর্থবার এর জন্য পুনরায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন ।
২০২১ সালের এপ্রিল মাসে, একটি গণভোটের মাধ্যমে তিনি একটি সাংবিধানিক আইন সংশোধনীতে স্বাক্ষর করেন যার মধ্যে দিয়ে তাঁকে আরও দুবার পুনর্নির্বাচনের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অনুমতি দেওয়া হয়। সম্ভাব্যভাবে তার রাষ্ট্রপতির মেয়াদ ২০৩৬ পর্যন্ত প্রসারিত হবে।