মডেল কোড অফ কন্ডাক্ট কি? মডেল কোড অব কন্ডাক্ট চালু হবার পর রাজনৈতিক দলগুলি কী কী করতে পারে না?

আজ ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করা হবে। তারিখ ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে সারাদেশে ‘মডেল কোড অব কন্ডাক্ট’ কার্যকর হবে।

মডেল কোড অফ কন্ডাক্ট কি?

দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার জন্য নির্বাচন কমিশনের কিছু স্পষ্ট নিয়ম আছে । এই নিয়মগুলিই ‘মডেল কোড অফ কন্ডাক্ট’ নামে পরিচিত। লোকসভা বা বিধানসভা নির্বাচনের সময়, সমস্ত দলকে এই নিয়মগুলি মেনে চলতে হয়। এই “মডেল কোড অফ কন্ডাক্ট” এর মাধ্যমে নির্বাচনে লড়া সমস্ত দলগুলি কী করতে পারে এবং কী করতে পারে না তা নির্ধারিত হয়। ভারতীয় সংবিধানের ৩২৪ অনুচ্ছেদের অধীনে, নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দলগুলিকে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য আচরণবিধি অনুসরণ করতে বাধ্য করতে পারে।

কেরালা বিধানসভা নির্বাচনের সময় ১৯৬০ সালে প্রথমবারের মতো ‘মডেল কোড অফ কন্ডাক্ট’ প্রয়োগ করা হয়েছিল। ১৯৬২ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময় প্রথমবারের মতো নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দলগুলিকে এই নিয়মগুলি সম্পর্কে অবহিত করে। ১৯৬৭ সালে অনুষ্ঠিত লোকসভা নির্বাচন এবং বিধানসভা নির্বাচন থেকে আদর্শ আচরণবিধি কার্যকর করা হয়েছিল।

রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মচারীরা নির্বাচনকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে নির্বাচন কমিশনের অধীনে কাজ করে। নির্বাচন শেষ হলেই ‘মডেল কোড অফ কন্ডাক্ট’ উঠে যায়।

‘মডেল কোড অব কন্ডাক্ট’ চালু হবার পর রাজনৈতিক দলগুলি কী কী করতে পারে না?

১) আচরণবিধি কার্যকর হলে মন্ত্রীরা নির্বাচনী সমাবেশ করতে পারবেন না। এই সময়ে মন্ত্রীরা তাদের বাসভবন ও অফিসের মধ্যে যাতায়াতের জন্য সরকারি যানবাহন ব্যবহার করতে পারবেন। রাজনৈতিক সমাবেশ বা যাত্রায় এসব গাড়ি ব্যবহার করা যাবে না।

২) আদর্শ আচরণবিধি কার্যকর হওয়ার পর কোনো বিশেষ রাজনৈতিক দলের সুবিধা হয় এমন কোনো অনুষ্ঠানে জনগণের অর্থ ব্যবহার করা যাবে না।

৩) সরকারি ঘোষণা, উদ্বোধন, ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন এবং এই জাতীয় অন্যান্য কাজের মতো কোনো অনুষ্ঠান সংগঠিত করা যায় না। তবে যদি এই কাজগুলির মধ্যে কোনওটি ইতিমধ্যে শুরু হয়ে থাকে তবে তা চলতে পারে।

৪) মন্দির, মসজিদ, গুরুদ্বার বা অন্য কোনো ধর্মীয় স্থান কোনো রাজনৈতিক অনুষ্ঠান বা রাজনৈতিক সমাবেশে ব্যবহার করা যাবে না।

৫) আদর্শ আচরণবিধি কার্যকর হলে সরকার কোনো সরকারি কর্মচারীকে বদলি বা কোনো নতুন পদ দিতে পারবে না। কোনো নির্দিষ্ট কর্মচারীকে বদলি করতে হলে নির্বাচন কমিশনের অনুমতি নিতে হবে।

৬) কোনো সভা আয়োজন, মিছিল বের করা এবং কোনো সরকারি বা বেসরকারি স্থানে লাউডস্পিকার ব্যবহার করার আগে স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছ থেকে লিখিত অনুমতি নেওয়া প্রয়োজন। রাত ১০টা থেকে সকাল ৬টার মধ্যে লাউডস্পিকার ব্যবহার করা যাবে না।

৭) রাজনৈতিক দল এবং প্রার্থীদের নিশ্চিত করতে হবে যে তাদের সমর্থকরা অন্য দলের দ্বারা আয়োজিত সভা-সমাবেশে বাধা সৃষ্টি করতে বা সভা বানচাল করাতে যুক্ত থাকতে পারবে না।

৮) কোনো রাজনৈতিক দল বা প্রার্থী তার বা তার অনুসারীদের পতাকা ও ব্যানার লাগানো , নোটিশ সাঁটানো, স্লোগান লেখা ইত্যাদির জন্য জমি বা বাড়ির মালিকের অনুমতি ব্যতীত কোনো ব্যক্তির জমি, ভবন, প্রাচীর ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারবে না।

৯) সমস্ত রাজনৈতিক দলকে শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খল ভোটগ্রহণ নিশ্চিত করতে নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের সাথে অসহযোগিতা করা এবং ভোটারদের কোন প্রকার বিরক্তি বা বাধা দান করতে পারবে না।

১০) কেন্দ্রীয় বা রাজ্য সরকারের মন্ত্রীরা প্রার্থী বা ভোটার বা অনুমোদিত এজেন্ট হিসাবে তাদের ক্ষমতা ছাড়া কোনও ভোট কেন্দ্র বা গণনার জায়গায় প্রবেশ করতে পারবেন না। ইত্যাদি..

Exit mobile version