রাজ্যের সমস্ত ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল করে দিল কলকাতা হাই কোর্ট।মমতা জানান, “রায় আমি মানি না।”

২০১০ সালের পর তৃণমূল শাসনে দেওয়া রাজ্যের সমস্ত ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল করে দিল কলকাতা হাই কোর্ট। বুধবার কলকাতা হাইকোর্ট একটি রায়ে জানিয়েছে, আজকের পর থেকে বাতিল হওয়া ওবিসি শংসাপত্র আর কোনও সরকারি চাকরি প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত হবে না। যতদূর জানা যাচ্ছে হাই কোর্টের এই কঠিন আদেশের ফলে বাতিল হয়ে গেল প্রায় পাঁচ লক্ষ ওবিসি সার্টিফিকেট। একই সঙ্গে হাইকোর্ট বলেছে, এই প্রায় পাঁচ লক্ষ সার্টিফিকেট ব্যবহারকারী যাঁরা ইতিমধ্যে এই শংসাপত্রের সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় চাকরি করছেন মানবিক কারণে এই রায়ে তাঁদের চাকুরি প্রভাবিত হবে না।

১২ বছর চলা ওবিসি সংরক্ষণ একটি মামলায় এই রায় ঘোষণা করল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার ডিভিশন বেঞ্চ।

বুধবার হাইকোর্টের তরফ থেকে বলা হয়েছে, ২০১০ পরবর্তী সমস্ত ওবিসি সংরক্ষণ তালিকা বাতিল করা হল। ২০১০ সালের আগের নথিভুক্ত ওবিসি তালিকা বহাল থাকছে। এতদিন যাঁরা ওবিসি সংরক্ষণ তালিকায় চাকরি পেয়েছেন বা নিয়োগ প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছেন, তাঁরা প্রত্যেকেই পুরনো সংরক্ষণ তালিকায় চাকরি পাবেন। এ ছাড়া নতুন করে সংরক্ষণ তালিকা প্রকাশ করতে হবে।

হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, ওয়েস্ট বেঙ্গল ব্যাকওয়ার্ড ক্লাস কমিশন অ্যাক্ট ১৯৯৩ অনুযায়ী ওবিসিদের নতুন তালিকা তৈরি করতে হবে। সেই তালিকা বিধানসভায় পেশ করে চূড়ান্ত অনুমোদন নিতে হবে। তবে ২০১০ সালের আগে যে যে গোষ্ঠীগুলিকে ওবিসি শ্রেণিভুক্ত বলে ঘোষণা করা হয়েছে, সেগুলি বৈধ থাকছে বলেই জানায় হাই কোর্ট।

 কেন এই রায় ?

এই প্রসঙ্গে কলকাতা হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, এই সময়ের মধ্যে (২০১০ সালের পর ) যে ওবিসি সার্টিফিকেট তৈরি করা হয়েছে তা পুরোপুরি আইন মেনে বানানো হয়নি।

বুধবার যে মামলার ভিত্তিতে এই নির্দেশ দিল হাই কোর্ট, সেই মামলাটি দায়ের হয় ২০১২ সালে। মামলাকারীদের তরফে আদালতে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী বিক্রম বন্দ্যোপাধ্যায় ও সুদীপ্ত দাশগুপ্ত। তাঁরা জানিয়েছেন, ২০১০ সালে একটি অন্তর্বর্তী রিপোর্টের ভিত্তিতে পশ্চিমবঙ্গে ‘অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি’(obc ) তৈরি করেছিল বামফ্রন্ট সরকার। ওই শ্রেণির নাম দেওয়া হয় ‘ওবিসি-এ’। কিন্তু তার পরের বছরই ক্ষমতা থেকে সরে যায় বামফ্রন্ট। ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসে তৃণমূল। নতুন সরকার ক্ষমতায় এসে ওই শ্রেণি সংক্রান্ত চূড়ান্ত রিপোর্ট ছাড়াই একটি নতুন তালিকা তৈরি করে এবং আইন প্রণয়ন করে। এই আইনের বৈধতা সম্বন্ধে প্রশ্ন তুলে মামলা করা হয় কলকাতা হাইকোর্টে।

২০১০ সালের আগে যারা ওবিসি হিসাবে গণ্য হয়েছিলেন তাদের আজকের এই রায়ে কোন প্রভাব পড়বে না বলেও আদালত জানিয়েছে।

কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে ২০১০ সাল পরবর্তী রাজ্য সরকারের দেওয়া সমস্ত ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল। রায় নিয়ে প্রথম প্রতিক্রিয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। খড়দহের নির্বাচনী প্রচার মঞ্চ থেকে সাফ জানান, “রায় আমি মানি না।”

Related Posts

পশ্চিমবঙ্গের ছয়টি বিধানসভা আসনের উপনির্বাচন ১৩ই নভেম্বর। দেখে নিন সম্পূর্ণ প্রার্থী তালিকা।

পশ্চিমবঙ্গের ছয়টি বিধানসভা আসনের উপনির্বাচন ১৩ই নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে, যার ফলাফল ঘোষণা হবে ২৩শে নভেম্বর। যে ছয়টি কেন্দ্রে উপনির্বাচন হবে সেগুলি হল সিতাই (SC), মাদারিহাট (ST), নৈহাটি, হাড়োয়া, মেদিনীপুর এবং…

ভোটের দিনে মধুর আলিঙ্গন দিলীপ ঘোষ ও কীর্তি আজাদের।সম্প্রীতি দীর্ঘজীবী হোক বলছেন অনেকেই।

 ভোটের দিনে মধুর আলিঙ্গন দিলীপ ঘোষ ও কীর্তি আজাদের। গত একমাসের ভোটের প্রচারে বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল ও বিজেপি প্রার্থী কীর্তি আজাদ ও দিলীপ ঘোষ একে অপর কে যে…

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You Missed

আজ থেকে ট্রেনের টিকিট কাটার নিয়মে বড় পরিবর্তন। জেনে নিন তার নিয়ম কানুন।

আজ থেকে ট্রেনের টিকিট কাটার নিয়মে বড় পরিবর্তন। জেনে নিন তার নিয়ম কানুন।

পশ্চিমবঙ্গের ছয়টি বিধানসভা আসনের উপনির্বাচন ১৩ই নভেম্বর। দেখে নিন সম্পূর্ণ প্রার্থী তালিকা।

পশ্চিমবঙ্গের ছয়টি বিধানসভা আসনের উপনির্বাচন ১৩ই নভেম্বর। দেখে নিন সম্পূর্ণ প্রার্থী তালিকা।

ইরানে বোমা হামলা ইসরায়েলের। বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কা।

ইরানে বোমা হামলা ইসরায়েলের। বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কা।

ভারতীয় অলিম্পিক পদক বিজয়ীদের একটি বিস্তৃত তালিকা।

ভারতীয় অলিম্পিক পদক বিজয়ীদের একটি বিস্তৃত তালিকা।

রবিবার প্যারিস অলিম্পিক্সের দ্বিতীয় দিনে (২৮ জুলাই) ভারতের সূচি।

রবিবার প্যারিস অলিম্পিক্সের দ্বিতীয় দিনে (২৮ জুলাই) ভারতের সূচি।

অলিম্পিক্সে জিতলেন লক্ষ্য, সাত্ত্বিক-চিরাগ, শুটিংয়ে পদকের লড়াইয়ে মনু, হকিতেও জয় ভারতের।

অলিম্পিক্সে জিতলেন লক্ষ্য, সাত্ত্বিক-চিরাগ, শুটিংয়ে পদকের লড়াইয়ে মনু, হকিতেও জয় ভারতের।