বিচারপতির পদ থেকে ইস্তফা। মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি পদ থেকে পদত্যাগ করছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। কলকাতার একটি সংবাদমাধ্যমকে একান্ত সাক্ষাৎকার দেবার সময় একথা জানিয়েছেন তিনি। বিচারপতি পদে ইস্তফা দিয়ে তিনি রাজনীতিতে আসছেন। সোমবারই আদালতে তাঁর শেষ দিন।
রবিবার দুপুরে ঐ সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, গত সাত দিন ধরে ছুটি নিয়েছিলাম। কিছু ব্যক্তিগত কাজ ছিল। সোমবার হাইকোর্টে গিয়ে কিছু বকেয়া কাজ সারতে হবে। তার পর মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতির কাছে আমার ইস্তফা পত্র পাঠিয়ে দেব।
এদিন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, রাজ্যের শাসক দল আমাকে যে চ্যালেঞ্জ করেছে তা গ্রহণ করছি। শুধু কালকের দিনটা। তার পর মঙ্গলবার থেকে আমি রাজনীতিতে নেমে পড়ব। তবে কোন দলের সঙ্গে তিনি যুক্ত হতে চলেছেন সে বিষয়ে কিছু জানাননি।
রাজ্যের তৃণমূল সরকারের শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতিতে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের অসামান্য রায় তাঁকে সংবাদের শিরোনাম এনেছিল। তাঁর সঙ্গে রাজ্যের সংঘাত দিনের পর দিন চরম আকার নিয়েছে। তাঁর নির্দেশেই গ্রেফতার করা হয়েছিল রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে। শুরুর দিন থেকেই বিচারপতির মনোভাব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল তৃণমূল।
কুণাল ঘোষ থেকে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর উদ্দেশে বলেছিলেন , উনি বিচারপতির পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে রাজনীতিতে নেমে পড়ুন। বিচারপতির পদে থেকে রাজনীতি যেন না করেন।
————————-বিজ্ঞাপন————————–
—————————————————————
ওই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘যখনই প্রতিক্রিয়া দিয়েছে ক্ষমতাশীল দল, তখনই বলা হয়েছে যে আপনি মাঠে আসুন, মাঠে এসে লড়াই করুন। তো আমি ভেবে দেখলাম যে তাঁরা যখন ডেকেছেন এতই করে, এত ধরনের ব্যঙ্গ করেছেন, এত অপমানজনক কথা বলেছেন, তখন তাঁদের ইচ্ছাটা পূর্ণ হওয়ার দরকার।’
তিনি জানিয়েছেন যে কংগ্রেস, বিজেপি, বাম বা অনেক ছোট-ছোট দল আছে, সেইসব দলে যোগদান করলেও করতে পারেন। সেই তালিকায় তৃণমূলের নাম ছিল না। বরং বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘ইতিহাসে আমরা মৌর্য সাম্রাজ্যের কথা পড়েছি। এখন চোখের সামনে আমরা চৌর্য সাম্রাজ্যকে দেখছি।
বিচারপতির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হওয়ার বিষয়ে কুনাল খোজ তার এক্স হেন্ডেলে লিখেছেন,
“নতুন ইনিংসের শুভেচ্ছা। এধরণের মানুষ রাজনীতিতে এলে ভালো।
তবে প্রশ্ন ১) যে দলেই যান, তাতে আপনার আগের রায়, সংলাপের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন থাকবে। আপনি তৃণমূল বিরোধী হিসেবেই ওসব বলেছেন, প্রমাণ হবে।
২) যে দলেই যান, সেখানে দুর্নীতি বা অন্য কোনো অভিযোগ থাকবেই। সেগুলো তখন মেনে নিতে পারবেন তো?”