আমেরিকার রবিন্সভিল NJ-এর BAPS শ্রী স্বামীনারায়ণ মন্দিরটি ৮ই অক্টোবর মহন্ত স্বামী মহারাজ দ্বারদঘাটন করলেন। মন্দিরটি ১৮ই অক্টোবর, নবরাত্রি ২০২৩ এর চতুর্থ দিন থেকে দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন BAPS এর আধ্যাত্বিক প্রধান মহন্ত স্বামী মহারাজ। অনুষ্ঠানটিতে আতশবাজি, লেজার সো এর সাথে বিভিন্ন নৃত্য পরিবেশনাও ছিল।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি দেখতে – এখানে ক্লিক করুন।
BAPS স্বামীনারায়ণ অক্ষরধাম, ১৮৫ একর জুড়ে বিস্তৃত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম হিন্দু মন্দির। এক সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মধ্যে গত ৭ ই ডিসেম্বর ২০২৩ জাতিসংঘের (UN) রাষ্ট্রদূত এবং প্রতিনিধিদের একটি বিশিষ্ট দল স্বামীনারায়ণ অক্ষরধাম মন্দিরটি ঘুরে দেখেন। এই প্রতিনিধি দলে ছিলেন কম্বোডিয়া, ইরিত্রিয়া, গ্রেনাডা, গায়ানা, কাজাখস্তান, লাইবেরিয়া, মালাউই, মরক্কো, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, সেন্ট ভিনসেন্ট অ্যান্ড গ্রেনাডাইনস, তিমুর লেস্টে, মঙ্গোলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, মালদ্বীপ, সেইসাথে পোল্যান্ড, কোস্টারিকা, ব্রাজিল, লেবানন , ভুটান, এবং জাতিসংঘের সন্ত্রাস দমন শাখার প্রতিনিধিরা । এই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন ভারতের রাষ্ট্রদূত রুচিরা কাম্বোজ।
মন্দিরটিতে প্রাচীন ভারতীয় শিল্প, স্থাপত্য এবং সংস্কৃতির উপাদানগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করে ডিজাইন করা হয়। যার মধ্যে ১০০০০ টি মূর্তি, প্রাচীন ভারতীয় বাদ্যযন্ত্রের রূপ এবং নৃত্যের ফর্মগুলি খোদাই করা আছে। এখানে ১.৯ মিলিয়ন ঘনফুট পাথর ব্যবহার করা হয়েছে।
ভারত থেকে গ্রানাইট ও রাজস্থানের বেলেপাথর, মিয়ানমারের সেগুন কাঠ, বুলগেরিয়া এবং তুরস্ক থেকে চুনাপাথর সহ বিশ্বের ২৯ টিরও বেশি বিভিন্ন স্থান থেকে পাথরটি সংগ্রহ করা হয়েছিল।
৬৮০০০ ঘনফুট ইতালীয় ক্যারারা মার্বেল ভারতের রাজস্থানে পাঠানো হয় যেখানে শত শত কারিগর নাগারাদি শৈলীতে পাথর খোদাই করে মুক্তি ও নাকসা তৈরি করে। পাথর গুলিকে খোদাই করার পর ওয়ার্কশপে একত্রিত করা হয় , প্রকৌশলীরা ক্রমানুসারে টুকরোগুলোকে সংখ্যায়ন করে রবিন্সভিলে পাঠায় । খোদাই করা পাথরগুলি নির্মাণ স্থলে পৌঁছালে সেগুলিকে মন্দিরে বসানোর কাজ শেষ করা হয়।
কাঠামোটি ৮৭ ফুট চওড়া, ১৩৩ ফুট লম্বা এবং ৪২ ফুট উঁচু। মণ্ডপের প্রবেশদ্বার, ময়ূর দ্বার নামে পরিচিত, এতে ময়ূর, হাতি খোদাই করা আছে।মন্দিরটির মধ্যে ৯৮টি স্তম্ভ (খোদাই করা স্তম্ভ), ৬৬টি ময়ূর শৈলীর খিলান, ১৪৪টি পবিত্র মূর্তি, ৯১ টি হাতির সাথে সাথে বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র এবং ফুল, ৫৮টি আলংকারিক সিলিং ডিজাইন এবং আরও অনেক কিছু খোদাই করা আছে ।মন্দিরটি প্রায় ১২৫০০ স্বেচ্ছাসেবকদের দ্বারা নির্মিত হয়েছে।
অক্ষরধাম মহামন্দিরে ঐতিহ্যের সাথে নতুনত্বকে একত্রিত করে এক নইসর্গিক রুপ দেওয়া হয়েছে। মহামন্দিরের ভিত্তি প্লিন্থের চারপাশে হাঁটার সময় শ্রী কৃষ্ণ এবং ভগবান রামের জীবন, বেদ এবং উপনিষদের মূল বার্তা থেকে দর্শনার্থীরা নিজেদের সমৃদ্ধ করতে পারবেন। এই মন্দিরটি ভারতের বাইরে দ্বিতীয় বৃহত্তম হিন্দু মন্দির। ভারতের বাইরে সর্ববৃহৎ হিন্দু মন্দির আছে কম্বোডিয়ার আঙ্কোর ওয়াটে। মন্দিরটি সম্পূর্ণ নির্মাণ করতে সময় লাগে (২০১১ থেকে ২০২৩) ১২ বছর। মন্দিরটি সম্পূর্ণ করতে মোট ৪.৭ মিলিয়ন ম্যান ঘন্টা সময় লেগেছে