কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন আজ বাজেট পেশ করলেন। এটি ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে অন্তর্বর্তী বাজেট । এটি অর্থমন্ত্রী হিসাবে তার ষষ্ঠ বাজেট এবং মোদী সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদে শেষ বাজেট। ২০২৪-২৫-এর প্রাক-নির্বাচন বাজেট প্রস্তুত করার আগে বৃহস্পতিবার সংসদে যাওয়ার আগে তিনি রাষ্ট্রপতি ভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করেন।
২০২৪ সালের অন্তর্বর্তীকালীন বাজেটে অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রকে শক্তিশালী করার ও সামাজিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার লক্ষ্যে বেশ কয়েকটি পরিবর্তনমূলক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বাজেটে বিশেষ ঘোষণাগুলি হল:
পিএম আবাস যোজনা (গ্রামীণ):
পরিবারের সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে উদ্ভূত প্রয়োজনীয়তা মেটাতে আগামী পাঁচ বছরে আরও ২ কোটি ঘর দেওয়া হবে।
রুফটপ সোলারাইজেশন এবং ফ্রি বিদ্যুৎ:
রুফটপ সোলারাইজেশনের মাধ্যমে, এক কোটি পরিবার প্রতি মাসে ৩০০ ইউনিট পর্যন্ত বিনামূল্যে বিদ্যুৎ পেতে সক্ষম হবে।
মধ্যবিত্তের জন্য আবাসন:
সরকার ভাড়া বা বস্তি বা অনুমোদিত নয় এরকম বাসস্থানে বসবাসকারী মধ্যবিত্তদের তাদের নিজস্ব বাড়ি তৈরি বা কেনার জন্য অর্থনৈতিকভাবে সহায়তা করবে।
মেডিকেল কলেজ:
সরকারের বিভিন্ন বিভাগের অধীনে যে সব হাসপাতাল আছে তাদের পরিকাঠামোকে ব্যবহার করে আরও মেডিকেল কলেজ স্থাপনের পরিকল্পনা করছে কেন্দ্র সরকার। এই বিষয়ে যে সমস্যাগুলি তৈরি হতে পারে তার পরীক্ষা করা ও প্রাসঙ্গিক সুপারিশ করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হবে।
জরায়ুমুখের ক্যান্সারের টিকা:
কেন্দ্র সরকার ৯ থেকে ১৪ বছর বয়সী মেয়েদের মধ্যে জরায়ুমুখের ক্যান্সার প্রতিরোধের জন্য টিকা নিতে উৎসাহিত করবে।
মা ও শিশু স্বাস্থ্য পরিচর্যা:
“সক্ষম অঙ্গনওয়াড়ি এবং পোষান ২.০” এর অধীনে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলির আপগ্রেডেশন, ১৪টি উন্নত পুষ্টি যুক্ত খাবার সরবরাহ, প্রাথমিক শৈশবের যত্ন এবং বিকাশের কাজ গুলিকে ত্বরান্বিত করা হবে।
আয়ুষ্মান ভারত:
সমস্ত আশা কর্মী, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এবং হেল্পারদের আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের অধীনে স্বাস্থ্যসেবা কভারের মধ্যে আনা হবে।
বাজেট (FY২৫)-এ সব থেকে বেশি বরাদ্দ করা হয়েছে এমন সেক্টর গুলি নিম্নরূপ –
- প্রতিরক্ষা মন্ত্রক: ৬.২ লক্ষ কোটি টাকা
- সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক মন্ত্রক: ২.৭৮ লক্ষ কোটি টাকা
- রেল মন্ত্রক: ২.৫৫ লক্ষ কোটি টাকা
- ভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রণালয়, খাদ্য ও জনসাধারণের বন্টন: ২.১৩ লক্ষ কোটি টাকা
- স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়: ২.০৩ লক্ষ কোটি টাকা
- গ্রামীণ উন্নয়ন মন্ত্রক: ১.৭৭ লক্ষ কোটি টাকা
- রাসায়নিক ও সার মন্ত্রক: ১.৬৮ লক্ষ কোটি টাকা
- যোগাযোগ মন্ত্রক: ১.৩৭ লক্ষ কোটি টাকা
- কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রক: ১.২৭ লক্ষ কোটি টাকা
পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য মূল ঘোষণাগুলি হলো –
- ১) পরিকাঠামোর ব্যয় ১১.১% বেড়ে ১১.১১ লক্ষ কোটি টাকা হয়েছে।
- ২) গতি শক্তি মাস্টার প্ল্যানের অধীনে রাজ্য সরকারগুলিকে ৫০ বছরের সুদ-মুক্ত ঋণ আরও এক বছরের জন্য বাড়ানো হয়েছে।
- ৩) তিনটি প্রধান অর্থনৈতিক রেল করিডোর কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে। এগুলি হল: (ক) শক্তি, খনিজ এবং সিমেন্ট করিডোর, (খ) বন্দর সংযোগ করিডোর এবং (গ) উচ্চ ট্রাফিক ঘনত্ব করিডোর।
- ৪) যাত্রীদের নিরাপত্তা, সুবিধা এবং আরাম বাড়াতে ৪০,০০০টি সাধারণ রেল বগিকে বন্দে ভারতের মানদণ্ডে রূপান্তরিত করা হবে।
- ৫) আরও বেশি শহর NAMO ট্রেন এবং মেট্রো রেল পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত করা হবে।
ট্যাক্স স্ল্যাব
নতুন ট্যাক্স স্ল্যাব
- ১) ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ের ওপর কোনও ট্যাক্স লাগবে না।
- ২) ৩ লক্ষ থেকে ৬ লক্ষের মধ্যে আয় হলে আয়ের ৫ শতাংশ হারে ট্যাক্স দিতে হবে (ধারা 87A এর অধীনে ট্যাক্স ছাড় পাওয়া যাবে।)
- ৩) ৬ লক্ষ থেকে ৯ লক্ষের মধ্যে আয় হলে আয়ের উপর ১০ শতাংশ ট্যাক্স দিতে হবে ( ৭ লক্ষ পর্যন্ত আয়ের উপর ধারা 87A এর অধীনে ট্যাক্স ছাড় পাওয়া যাবে। )
- ৪) ৯ লক্ষ থেকে ১২ লক্ষের মধ্যে আয় হলে ১৫ শতাংশ হারে ট্যাক্স লাগবে।
- ৫) ১২ থেকে ১৫ লক্ষের মধ্যে আয় হলে ২০ শতাংশ হারে ট্যাক্স দিতে হবে।
- ৬) ১৫ লক্ষ বা তার বেশি আয়ের উপর ৩০ শতাংশ ট্যাক্স দিতে হবে।
পুরানো ট্যাক্স স্ল্যাব
- ১) ২.৫ লক্ষ পর্যন্ত আয়ে পুরানো ট্যাক্স স্ল্যাবের অধীনে ট্যাক্স দিতে হবে না।
- ২) ২.৫ লক্ষ থেকে ৫ লক্ষের মধ্যে আয়ের উপর ৫ শতাংশ হারে ট্যাক্স দিতে হবে ।
- ৩) ৫ লক্ষ থেকে ১০ লক্ষ পর্যন্ত ব্যক্তিগত আয়ের উপর ২০ শতাংশ হারে ট্যাক্স লাগবে।
- ৪) ১০ লক্ষের বেশি ব্যক্তিগত আয়ের উপর ৩০ শতাংশ হারে ট্যাক্স দিতে হবে।