ইডির সহকারী ডিরেক্টর মিথিলেশ কুমার মিশ্রকে সরিয়ে দিলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। রাজ্যের কোনও মামলায় থাকতে পারবেন না মিথিলেশ।
কোর্টর নির্দেশে তৃণমূল সাংসদ অভিষেকের সম্পত্তির বিবরণ হাইকোর্টে জমা দিয়েছিল ইডি। বিবরণ দেখে গত সোমবার প্রশ্ন তোলেন মাননীয় বিচারপতি সিনহা। ইডির বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)-এর অফিসার মিথিলেশের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যেই অসন্তোষ ব্যক্ত করেন মাননীয় বিচারপতি । তিনি বলেন, ‘‘আপনি কি তদন্ত থেকে অব্যাহতি চান? এটা কি পোস্ট অফিস? কেউ কিছু দিল, এসে প্রকাশ করলেন! কার কত সম্পত্তি কিছু দেখলেন না?’’
ভর্ৎসনা করে বিচারপতি বলেন, ‘রিপোর্টে বলছেন অভিষেকের মাত্র ৩টি বিমা, আর কোনও সম্পত্তি বা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নেই? সাংসদ হিসেবে অভিষেকের বেতন জমা পড়ে কোন অ্যাকাউন্টে?’ ‘এখানে অ্যাকাউন্টের উল্লেখ নেই কেন? আপনারা কি পোস্ট অফিস?’ ইডির ভূমিকায় প্রশ্ন তুলে বিচারপতি বলেন, ‘সন্দেহ হচ্ছে আপনারাই তথ্যগোপন করছেন’। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস নিয়ে গত আট মাস ধরে ইডি যে তদন্ত করেছে, তার নিট ফল শূন্য।
এখন পর্যন্ত তদন্তের (প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ তদন্ত) নিট ফল ‘শূন্য’ জানিয়ে বেশ কিছু তথ্য বিশদে দিতে নির্দেশ দেন বিচারপতি সিনহা। লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস সংস্থার ছ’জন ডিরেক্টরের নাম, তাঁদের সম্পত্তির পরিমাণ, সংস্থার লেনদেন, তার মূল্য, এই সংস্থায় কারা ক্লায়েন্ট, তাঁদের নাম, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, সংস্থার রোজের কাজ কে দেখতেন, সিইও অভিষেকের সম্পত্তির বিস্তারিত বিবরণ, তাঁর মা লতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পত্তির বিস্তারিত বিবরণ, সংস্থার সব কর্মীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, কারা, কবে সংস্থায় যোগ দিয়েছেন, কেন সংস্থার ঠিকানা পরিবর্তন এবং কার কাছে তদন্ত নিয়ে ইডি সাহায্য চায়, তা জানাতে হবে হাই কোর্টে।
হাইকোর্টের বকুনি খেয়ে আগামী ৩ অক্টোবর অভিষেককে সমস্ত নথি নিয়ে সিজিওতে হাজির হতে বলেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। ঘটনাচক্রে ওই দিন কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনার বিরুদ্ধে দিল্লিতে তৃণমূলের ধর্ণা কর্মসূচীর দ্বিতীয় দিন। আর সেই গুরুত্বপূর্ণ দিনেই অভিষেককে ডেকে পাঠিয়েছে ইডি।
অভিষেক কি যাবেন ইডির দপ্তরে! এই নিয়েই কাল থেকে জল্পনা চলছিলই। এরই মধ্যে শুক্রবার সকালে অভিষেক বিবৃতি দিয়ে সাফ জানিয়েছেন, হাজিরায় তিনি যাচ্ছেন না। উপস্থিত থাকবেন দিল্লিতে। আর এইদিনই হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা জানিয়েছেন, দ্রুত নতুন অফিসার নিয়োগ করা হোক।আগামী ৩ অক্টোবরের নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত বা অনুসন্ধান কোনও ভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। শুধু তাই নয়, বিচারপতির নির্দেশ, তদন্তের স্বার্থে যে কোনও পদক্ষেপ নিতে পারবে ইডি।