চৌধুরী চরণ সিং, পিভি নরসিমহা রাও ও এমএস স্বামীনাথনকে ভারতরত্ন দেবার কথা ঘোষণা করল ভারত সরকার। এই নিয়ে এখনও পর্যন্ত ৫ জন ব্যক্তিত্বকে এ বছর ভারতরত্ন দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই তালিকায় রয়েছেন দেশের দুই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ও একজন প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রী। আছেন একজন বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং একজন কৃষি বিজ্ঞানী।
আজ ভারতরত্ন পুরস্কারের জন্য ৩ জনের নাম ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এবার যে ৫ জন ভারতরত্ন পেলেন তাঁরা হলেন –
১) প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী চৌধুরী চরণ সিংকে (মরণোত্তর) ভারতরত্ন সম্মান দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেছেন যে দেশের প্রতি অতুলনীয় অবদানের জন্য চরণ সিংকে মরণোত্তর ভারতরত্ন দেওয়া হল ।
২) প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী পিভি নরসিমহা রাওকে (মরণোত্তর) ভারতরত্ন সম্মান দেওয়া হবে।
৩) কৃষি বিজ্ঞানী এমএস স্বামীনাথনকে (মরণোত্তর) ভারতরত্ন সম্মান দেওয়া হবে।
এর আগে দুটি নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
৪) প্রাক্তন উপ-প্রধানমন্ত্রী ও প্রবীণ বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আদবানিকেও ভারতরত্ন দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে।
৫) বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কার্পুরী ঠাকুরকে (মরণোত্তর) ভারতরত্ন দেওয়ার ঘোষণা করা হয়েছিল।
চৌধুরী চরণ সিং
১. চৌধুরী চরণ সিং ১৯০২ সালে মিরাটে একটি মধ্যবিত্ত কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। আগ্রা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রাক্তন ছাত্র চরণ সিং আইন বিষয়ে প্রশিক্ষণ নেন এবং গাজিয়াবাদে প্র্যাক্টিস শুরু করেন।
২. চরণ সিং কংগ্রেসের সাথে তার রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। ১৯৬৭ সালে, তিনি কংগ্রেস ত্যাগ করেন।
৩. ১৯৬৭ সালে সংযুক্ত বিধায়ক দলের জোটের নেতা নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথমবারের মতো উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হন। ১৯৭০ সালে তিনি দ্বিতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হন। ২৪ মার্চ ১৯৭৭ থেকে ২৮ জুলাই ১৯৭৯ পর্যন্ত তিনি ভারতের উপ প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন।
৪. ১৯৭৯ সালে ১৮ মাসের মোরারজি দেশাই-এর নেতৃত্বাধীন জনতা পার্টির সরকার পড়ে যাবার পর কংগ্রেস (আই) এর সমর্থনে ২৮শে জুলাই, ১৯৭৯-এ ভারতের পঞ্চম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন চৌধুরী চরণ সিং। কিন্তু লোকসভায় তার সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করার আগেই ইন্দিরা গান্ধী তার সরকারের প্রতি সমর্থন প্রত্যাহার করে নেন এবং চরণ সিং পদত্যাগ করেন। কিন্তু তিনি ১৪ই জানুয়ারী, ১৯৮০ পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী হিসাবে কাজ চালিয়ে যান ।
আরও পড়ুন : বিজেপি নেতা এলকে আডবাণীকে ভারতরত্ন দেওয়া হবে। ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি।
আরও পড়ুন : বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কর্পুরী ঠাকুর মরণোত্তর ভারতরত্ন পাচ্ছেন। রাষ্ট্রপতি ভবন ঘোষণা করেছে।
পিভি নরসিমহা রাও
১) পামুলাপার্টি ভেঙ্কটা নরসিমহা রাও ১৯৯১ সালের ২১শে জুন ভারতের ১০ম প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন।
২) ১৯৯৬ সালের ১৬ই মে পর্যন্ত মোট ১৭৯১ দিনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তিনি দেশকে অর্থনৈতিক সংস্কারের পথে নিয়ে যাওয়ার জন্য সবচেয়ে বেশি পরিচিত।
৩) নরসিমহা রাও প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পূর্বে অন্ধ্র প্রদেশ সরকারের একজন মন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন এবং ১৯৭১ সাল পর্যন্ত তাঁর আইন, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য সহ একাধিক পোর্টফোলিও ছিল।
এমএস স্বামীনাথন
ডঃ স্বামীনাথন ১৯৬০ এবং ৭০ এর দশকে কৃষিতে অভাবনীয় পরিবর্তনে প্রধান ভূমিকা পালন করেছিলেন। এই কৃষি বিপ্লব ভারতকে খাদ্যে নিরাপত্তা অর্জনে সহায়তা করে। গম ও ধানের উচ্চ ফলনশীল জাত প্রবর্তন ও আরও উন্নয়নে নেতৃত্ব ও ভূমিকার জন্য তাকে ভারতে ‘সবুজ বিপ্লবের জনক’ বলা হয় ।
কৃষি ও কৃষকদের কল্যাণে তার উল্লেখযোগ্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তাকে ভারতরত্ন দেবার কথা ঘোষণা করেছে মোদি সরকার।